Why need concrete block machine/কেন কংক্রিট ব্লক মেশিন প্রয়োজন!!!

২০২০ সালের পর বাংলাদেশে পোড়া ইট থাকবে নাঃ

পরিবেশ দূষণ রোধ ও কৃষিজমি রক্ষায় আগামী ২০২০ সালের মধ্যে পোড়া ইটের ব্যবহার বন্ধ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এ জন্য তিনি যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, আজ হোক কাল হোক পোড়া ইটের ব্যবহার বন্ধ করতেই হবে। ২০২০ সালের পর দেশে আর পোড়া ইট থাকবে না। গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ (সিডিজেএফবি) আয়োজিত 'পোড়া ইটের বিকল্প কংক্রিট ব্লক' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি অমিতোষ পালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মতিন আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী আবদুল আউয়াল। প্রবন্ধে বলা হয়, বছরে দেশে প্রায় ১৭ বিলিয়ন (এক হাজার ৭০০ কোটি) পিস ইট তৈরি হচ্ছে। প্রতি মিলিয়ন ইট তৈরিতে পোড়াতে হয় ২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা। এর পাশাপাশি বনভূমি ধ্বংস করে কাঠও পোড়ানো হচ্ছে। ইটভাটাগুলো থেকে প্রতি বছর কম হলেও

৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত হচ্ছে, যা দেশের মোট কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনের প্রায় ২৩ শতাংশ।

সেমিনারে হাউসিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক আবু সাদেক জানান, দেশে নিবন্ধিত ইটভাটার সংখ্যা ৭ হাজার ৯০০টি। আর ছোটবড় মিলিয়ে ৪৫ হাজার। এগুলোতে উর্বর কৃষিজমির ওপরভাগের মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। নানা কারণে প্রতি বছর দেশে এক শতাংশ কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। এই জমির ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ

ইটভাটার কারণে কমছে। ৮০ ভাগ জমি কমছে অপরিকল্পিত আবাসনের কারণে। ২০৪০ সালে জনসংখ্যা হবে ২৪ কোটি ৫০ লাখ। এ সময়ে যে কৃষিজমি নষ্ট হবে তা দিয়ে ৫ কোটি মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। এখনই যদি পোড়া ইট বন্ধ করা না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিবেশ ও খাদ্য সংকটে পড়বে বাংলাদেশ। অন্যদিকে পোড়া ইট তৈরিতে যে জ্বালানি খরচ হয়, ওই জ্বালানি দিয়ে বছরে অন্তত ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, পোড়া ইটের বিকল্প হিসেবে ইতিমধ্যে সরকার কংক্রিট ব্লকের ব্যবহার শুরু করেছে। ভাসানচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের জন্য যেসব আবাসন করা হচ্ছে, সেসব কংক্রিটের ব্লক দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া নোয়াখালীতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ১০টি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে কংক্রিট ব্লক দিয়ে। তিনি আরও বলেন, ইটের খোয়ায় নির্মিত সড়কের স্থায়িত্ব অনেক কম। কোথাও ইটের খোয়া দিয়ে সড়ক করলে দেখা যায় ৬ মাসের মধ্যে সেগুলো ভেঙে যাচ্ছে অথবা গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে। আর কংক্রিটের ব্লক দিয়ে সড়ক করলে তার স্থায়িত্ব দীর্ঘ হয়। মন্ত্রী আরও বলেন, দেশে পোড়া ইটের বিকল্প হিসেবে কংক্রিটের ব্যবহার বাড়াতে পাথর আমদানিতে শুল্ক্ক সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। এ জন্য ২০২০ সালের মধ্যে পোড়া ইট বন্ধের যে দাবি উঠেছে, সেটা বাস্তবায়নের জন্য তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।

বক্তারা বলেন, বিশ্বের উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলো অনেক আগেই পোড়া ইট তৈরি নিষিদ্ধ করেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে টপ সয়েলের ব্যবহার বন্ধের মাধ্যমে পোড়া ইট তৈরি নিষিদ্ধ করেছে। এ কারণে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ইট পাচার হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রকৌশী ম ইনামুল হক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পল্গানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নগর পরিকল্পনাবিদ হাসিবুল কবির, সাংস্কৃতিক কর্মী মনোরঞ্জন ঘোষাল, পরিবেশ কর্মী তুষার রেহমান, সাংবাদিক তৌফিক আলী প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.