ভাসমান ফিস ফিড

বাংলাদেশে ভাসমান ফিস ফিড এবং ফিড প্রসঙ্গে কিছু কথা:

floating fish feed pellet machine,floating fish feed extruder,fish feed machine,floating fish feed machine,fish feed extruder,floating fish feed making machine,floating fish feed extruder machine,floating fish feed pellet making machine,fish feed pellet machine,floating fish pellet machine,fish feed extruder machine,commercial fish feed,300kg floating fish feed pellet production line
Floating/Extruded fish feed

বাংলাদেশে ভাসমান (floating) ফিস ফিডের প্রচলন গত কয়েক বছরে অনেক দূর এগিয়ে গেছে । প্রচলিত ডুবন্ত ফিডের চাহিদার পাশাপাশি ভাসমান ফিডের চাহিদা প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে। ২০০১ সালে রূপসী ফিস ফিড মিল বাংলাদেশে প্রথম ভাসমান ফিডের যাত্রা শুরু করে। শুরুর দিকে খামারিদের ভিতর ভাসমান ফিডের প্রভাব তেমন পড়েনি । পরবর্তীকালে ২০০৬ সালে মেগা ফিড একটু বড় পরিসরে শুরু করে ভাসমান ফিডের বাজারজাতকরণ শুরু করে।

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ফিডমিল কোম্পানীই ডুবন্ত ফিডের পাশাপাশি ভাসমান ফিড তৈরি করছেন বা তৈরী করার কথা ভাবছেন। ভাসমান ফিড তৈরীর ক্ষেত্রে অনেকের অভিজ্ঞতা ভালো আবার সঠিকভাবে মেশিনপত্র নির্বাচন করতে না পারায় অনেকেরই অভিজ্ঞতা তিক্ত। এজন্য নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ভাসমান ফিস ফিড উৎপাদন করার আগে কি কি বিষয়ে বিবেচনা করতে হবে, তার উপর আমাদের এই আলোচনা।

ফিস ফিড দু’রকম হয়ে থাকে। প্রথমটি পিলেটেড (Pelleted) ফিড ও দ্বিতীয়টি এক্সট্রুডেড (Extruded) ফিড, যা আমাদের দেশে ফ্লোটিং ফিড নামে অধিক পরিচিত। প্রকৃত পক্ষে এক্সট্রুডেড ফিড ভাসমান, ডুবন্ত বা ধীর গতিতে ডুবন্ত (Slow Sinking) হতে পারে। তাই এক্সট্রুডার শুধু ভাসমান ফিডের জন্যই না বরং ডুবন্ত বা ধীর গতিতে ডুবন্ত (Slow Sinking) এর জন্য হতে পারে।

একটু পর্যালোচনা করে দেখা যেতে পারে ভাসমান ফিডের ধারনা কি কারণে তৈরি হয়ঃ
প্রকৃতিগত ভাবেই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পানির বিভিন্ন স্তরে বিচরন করে। সাধারনত মাছ পানির যে স্তরে বিচরন করে সে স্তরেই তাদের খাবার প্রয়োজন হয়। পূর্বে প্রাকৃতিক নিয়মে মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক খাবার পর্যাপ্ত ছিল। কিন্তু বর্তমানে চাষের পুকুরে মাছের ঘনত্ব বেশি থাকায় মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধির জন্য দরকারী খাবার মূলত: বাইরে থেকেই সরবরাহ করতে হয়। ক্ষুধার্ত মাছ তার খাদ্যের জন্য পুকুরের বিভিন্ন স্তরে বিচরন করে। সেক্ষেত্রে ডুবন্ত ও ভাসমান খাবারই চাষের পুকুরে প্রয়োগ করা যায়।

তবে ভাসমান খাবারের কিছু বৈশিষ্ট্য যা ডুবন্ত খাবারের থেকে ভিন্নতর, যেমন- মাছের পরিপাকতন্ত্র ক্ষুদ্র ও পরিপাক প্রক্রিয়া স্বল্প মেয়াদী হওয়ায় মাছের জন্য হালকা খাদ্য অধিক উপযোগী। হালকা খাবার দ্রুত পরিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাছের ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মূলত: এই ধারনা থেকেই শুরু হয় এক্সট্রুডেড ফিড টেকনোলজির বিকাশ। সাধারনত ডুবন্ত ফিডে স্টার্চের পরিমান শতকরা ১০ ভাগ হয়ে থাকে অন্যদিকে এক্সট্রুডেড ফিডে কমপক্ষে শতকরা ২০ ভাগ হয় যা তুলনামুলকভাবে মাছের পুষ্টি এবং বৃদ্ধিতে অধিক সহায়ক হয়।

আবার চিংড়ি খাদ্য বিষয়ে বলা যায়, ভাসমান ফিড চিংড়ির জন্য নয়, কারণ তারা পানির সর্বনিম্ন স্তরে বিচরন করে। চিংড়ি খাদ্য সবসময়ই ডুবন্ত হওয়া বাঞ্চনীয়। আমাদের দেশে চিংড়ি খাদ্য পিলেট মেশিন থেকেই তৈরি হয়। অনেকেরই জানা নেই যে চিংড়ির ডুবন্ত খাদ্য এক্সট্রুডার থেকেও তৈরি হতে পারে। এক্সট্রুডার থেকে চিংড়ির ডুবন্ত খাদ্য তৈরি করা হলে অধিক স্টার্চের পরিমান ও পানিতে দীর্ঘক্ষণ স্থায়ীত্বের কারণে চিংড়ি একদিকে যেমন পরিপূর্ণভাবে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে, অন্যদিকে খাদ্যগুণ এবং খাদ্য রূপান্তরের হার অধিক হওয়ায় খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে। তবে এটি বলাই বাহুল্য এক্সট্রুডার থেকে তৈরি চিংড়ি খাদ্য সাধারন খাদ্যের তুলনায় ব্যয়বহুল। আয় ও ব্যয়ের বিশ্লেষন করলে দেখা যাবে এক্ষেত্রেও এক্সট্রুডেড ফিডের ব্যবহার খামারীদের জন্য লাভজনক।
পিলেটেড এবং এক্সট্রুডেড ফিডের বিশেষ পার্থক্য হচ্ছে, পিলেটেড খাদ্য পানিতে খুব বেশী স্থায়ী হয়না বলে খাদ্যের অপচয়র বেশি হয়, অপরদিকে পানিতে এক্সট্রুডেড খাদ্যের স্থায়ীত্ব বেশী হওয়ায় এর কোন অপচয়ই হয় না।
 

No comments

Powered by Blogger.